অনলাইন রিপোর্ট : ঈশ্বরদী ও আশেপাশের হাটবাজার শীতকালীন সবজিতে সয়লাব। দামও এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। অন্যান্য সকল সবজির সাথে সাথে বাজারে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো। চাহিদার তুলনায় পাকা টমেটোর যোগান কম। তাই দাম অনেক বেশী।
কারণ টমেটো পাকার সময় এখনও হয়নি। একশ্রেণীর অসাধু কৃষক ও ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করে কৃত্রিম উপায়ে টমেটো পাকিয়ে বাজারজাত করছেন। ঈশ্বরদী বিভিন্ন এলাকায় টমেটো পাকাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ইথোফেন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও রাইফেন জাতীয় কেমিক্যাল। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। চিকিৎসকরা বলছেন, মানুষের শরীরে ধীরে ধীরে কাজ করে। মাত্রাতিরিক্ত ইথোফেন মানবদেহে প্রবেশ করলে ক্যান্সার ও কিডনি নষ্টসহ মৃত্যুর আশংকা রয়েছে। বাজার ঘুরেও বিপুল পাকা টমেটো দেখা গেছে।
খুচরা বাজারে যেখানে কাঁচা টমেটো ২৫-৩০ কেজি সেখানে ওই টমেটো কৃত্তিম উপায়ে পাকিয়ে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও রাইফেন জাতীয় হরমোন কেমিক্যেল টমেটো পাকানোর কাজে ব্যবহার হচ্ছে বলে জানা গেছে। এব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু পদকপ্রাপ্ত কৃষক ময়েজ উদ্দিন বলেন, মানবদেহের ক্ষতিকারক ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও রাইফেন জাতীয় হরমোন কেমিক্যেল টমেটো পাকানোর জন্য ব্যবহার হচ্ছে।
এসব কেমিক্যেল পানিতে মিশিয়ে সেই পানির মধ্যে টমোটো ডুবিয়ে খড়/পোয়াল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কাঁচা টমেটো পেকে সুন্দর রং ধারণ করে। কিছু কৃষক ও অসাধু ব্যবসায়ীরা টাকার লোভে এই অপকর্ম করছে। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, দেশের উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় এখন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করা জরুরী। মানব কল্যাণের জন্যই দেশের উন্নয়ন। নিরাপদ খাদ্যের অভাবে সেই মানুষই যদি অকালে মারা যায়, তাহলে এই উন্নয়ন কে ভোগ করবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল লতিফ কৃত্রিম উপায়ে টমেটো পাকিয়ে বাজারে বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, টমেটো পাকার সময় এখনও হয়নি। ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করে যেসব টমেটো পাকানো হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকারক। এতে ক্যানসারসহ দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি গবেষণায় রাইফেন জাতীয় হরমোন তেমন ক্ষতিকারক নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটি ব্যবহার করলে আসল স্বাদ পাওয়া যায় না।